রবিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২১

পুষ্টিহীনতার ৭টি লক্ষণ কি এবং এর প্রতিকার কি ?.



পুষ্টিহীনতার ৭টি লক্ষণ কি এবং এর প্রতিকার কি ?.

  যখন আমাদের শরীর খাবার থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে না তখনই দেখা দেয় পুষ্টিহীনতা। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই সমস্যা বেশী হয়। এই পুষ্টিহীনতার কারণে নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। হজমের সমস্যা, ত্বকের রোগ, হাড়ের বৃদ্ধি রোধ, এমনকি স্মৃতি ভ্রষ্টতাও হতে পারে। আপনি যদি বুঝতে পারেন যে পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন তাহলে তার প্রতিকার করাও সহজ হয়ে যায়।  

  প্রতিদিন সুষম খাবার খেলে শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়। তবে ভাল খাবার খেলেও কিছু রোগ বা হজমের সমস্যার কারণে শরীরে পুষ্টি ঠিকমত পূরণ নাও হতে পারে। গভীরভাবে খেয়াল না করলে শরীরে পুষ্টিহীনতা সহজে বুঝাও যায় না। তাই পুষ্টিহীনতার লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। 

  এখানে আমি পুষ্টীহীনতার ৭টি লক্ষণ এবং কোন কোন খাদ্য খেলে এই সমস্যা দূর হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করব।

১। রাতে কম দেখা বা রাতকানা -

ভিটামিন এ ভাল দৃষ্টিশক্তির জন্য এমনকি সামগ্রিক চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ প্রয়োজনীয়। এর ঘাটতি হলে রাতে দেখতে অসুবিধা হয়, সকালে চোখের পাতায় খসখসে ভাব থাকে, ও ফটোফোবিয়া (Photophobia) বা সূর্যের আলোতে তাকাতে অসুবিধা হয়। এতে চোখ শুকিয়ে যায়, ঘোলাটে দেখা যায় এমনকি চোখের রেটিনাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। 

যেসব খাবারে ভিটামিন এ আছেঃ

গরুর কলিজা

মিষ্টি আলু

গাজর

কড লিভার অয়েল

টুনা মাছ

পালং শাক

২। ভঙ্গুর, দাগযুক্ত বা ঢেউ খেলানো নখ

শরীরে জিঙ্ক (zinc) এর ঘাটতি দেখা দিলে এই সমস্যা দেখা যায়। নখ দেখে বোঝা সম্ভব যে আপনি পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন কিনা। 

যেসব খাবারে জিঙ্ক আছেঃ

গো মাংস

মুসুরের ডাল

চিংড়ি মাছ

মিষ্টি কুমড়ার বিচি

বাদাম

দই

ওটমিল

৩। মাংসপেশীর খিঁচুনি ও হাড়ের ব্যথা (muscle fatigue)

যদি আপনার হাড়ে ব্যথা লক্ষণ করেন তাহলে বুঝতে হবে শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ঘন ঘন মাংসপেশীর খিঁচুনি ও হাড়ের ব্যথা বোধ করলে এবং এ ব্যথা বাড়তে থাকলে বুঝবেন আপনার পুষ্টিহীনতা আছে। ভিটামিন ডি এর সবচেয়ে ভাল উৎস হচ্ছে সূর্যালোক। প্রতিদিন দুপুরের সূর্যে ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় কাটালে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পাবেন।

এছাড়া যেসব খাবারে ভিটামিন ডি আছেঃ

তৈলাক্ত মাছ যেমন, ইলিশ, পাঙ্গাস,

বিদেশী মাছ - স্যামন, সার্ডিন, ক্যানের টুনা মাছ ইত্যাদি।

গো মাংস

কড লিভার অয়েল

ডিমের কুসুম

৪। অনিয়মিত হৃদস্পন্দন বা হার্টবিট (Arrhythmia)

ক্যালসিয়াম আমাদের হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করে। যদি অনিয়মিত হার্টবিট এবং বুকে ব্যথা অনুভব করেন তবে বুঝতে হবে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হয়েছে। 

যেসব খাবারে ক্যালসিয়াম আছেঃ

দুধ

পনির

দই

মুসুরের ডাল

পালং শাক

লাল শাক

আলমন্ড বা কাঠ বাদাম

ক্যানের সার্ডিন মাছ

৫। পায়ের পাতা ও জিভে জ্বালাপোড়া ভাব

এ ধরনের সমস্যা হয় সাধারণত ভিটামিন বি-১২ এর অভাবে। যদি আপনার ত্বক শুকনো মনে হয়, ঘন ঘন কোষ্ঠকাঠিন্য হয়, আপনার চিন্তায়, ব্যবহারে ও স্মৃতিশক্তির কোন পরিবর্তন দেখেন তবে বুঝতে হবে ভিটামিন বি-১২ এর ঘাটতে থাকতে পারে। 

যেসব খাবারে ভিটামিন বি-১২ আছেঃ

গরুর কলিজা

গো মাংস

মাছ

ক্যানের টুনা ও সার্ডিন মাছ

দুধ

পনির

ডিম

৬। ক্ষত শুকাতে সময় লাগা

ভিটামিন সি এর অভাবে শরীরে কলাজেন (collagen) উৎপাদন কমে যায় যার ফলে ক্ষত শুকাতে সময় লাগে। এছাড়া ত্বকের সমস্যা, ত্বকে ছোট ছোট লাল ফোটা দেখা দিলে, হাড় এবং জয়েন্টে ব্যথা, দাঁত ব্রাশ করার সময় রক্ত পড়লে, অকারণেই ওজন বৃদ্ধি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিলে বুঝতে হবে শরীরে ভিটামিন সি এর ঘাটতি আছে। 

যেসব খাবারে ভিটামিন সি আছেঃ

আনারস

কমলা, কমলার জুস

লেবু

পেয়ারা

লিচু

ব্রকলি

পালং শাক

কাচা মরিচ 

৭। চুল পড়া

প্রতিদিন ১০০টা চুল পড়া স্বাভাবিক। কিন্তু যদি গোছা গোছা চুল পড়ে তবে তা খারাপ লক্ষণ। শরীরে আয়রন বা লোহার ঘাটতি দেখা দিলে এই সমস্যা হয়। এর ফলে শক্তি কমে যায়। এছাড়া হঠাৎ অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। আয়রনের ঘাটতি দেখা দিলে মাথা ব্যথা, মাংসপেশীর দুর্বলতা, জয়েন্টে ব্যথা, হঠাৎ শীত অনুভূত হওয়া, অবসাদগ্রস্ততা, শুকনো ও ফ্যাকাসে ত্বকের সমস্যা হয়। এ ধরণের যে কোন লক্ষণ দেখলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। এছাড়া খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করুন। 

যেসব খাবারে আয়রন আছেঃ

গো মাংস

মাছ

পালং শাক

গরুর কলিজা

মুসুরের ডাল

শিম

বরবটি

মিষ্টি কুমড়ার বিচি

ব্রকলি

ডার্ক চকোলেট

( আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।)


0 Post a Comment:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন