বিল গেটস’এর সেরা ৭ টি উপদেশ কি কি ?.
‘বিল গেটস’এর সেরা ৭ টি উপদেশ কি কি ?.
বিশ্বের সবার নিকট খুব পরিচিত একটি নাম বিল গেটস। এক নামেই সবাই তাকে চেনে কেন জানেন কি? কারণ ফোর্বসের রিপোর্ট অনুযায়ী তিনি টানা ১৩ বার পৃথিবীর সেরা ধনী ব্যক্তির খেতাবটি পেয়েছিলেন। শুধু তাই নয় এখনো তিনি তার অবস্থান ধরে রেখেছেন। বর্তমানে তার মোট সম্পদের পরিমান ৮৬ বিলিয়ন ডলার। মূলত মাইক্রোসফট কোম্পানি দ্বারা তার সফল ক্যারিয়ারের যাত্রা শুরু হয়। তবে তার একটি লাভজনক ব্যবসায় হচ্ছে এক্স বক্স (Xbox)। তাছাড়া বিভিন্ন নামকরা কোম্পানিতে তার শেয়ারও রয়েছে। আর দশ জনের মতই বিল গেটসের ক্যারিয়ারের শুরুটা সহজ ছিল না। বিল গেটসের ছিল অসাধারণ সৃজনশীলতা, নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আর অক্লান্ত পরিশ্রম। সঙ্গে ছিল প্রচন্ড অধ্যবসায়। যার কল্যাণে তিনি গড়ে তুলেছেন তার সম্পদের বিশাল সাম্রাজ্য। তাইতো সবাই একবাক্যে বলতে বাধ্য হয়,বিল গেটসই বর্তমান দুনিয়ার সবচেয়ে সফল এবং বুদ্ধিমান ব্যবসায়ী। ব্যবসা শুরু থেকে তা টিকিয়ে রাখা পর্যন্ত তার রয়েছে বিশাল অভিজ্ঞতা। তাইতো নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য তিনি তার অভিজ্ঞতা থেকে ৭টি উপদেশ দিয়েছেন। যা তাদের দূর্গম পথকে অনেকটাই সহজ করে দেবে। আজকের আয়োজনে বিল গেটসের সেই ৭টি উপদেশ নিয়ে আলোচনা করা হলো-
1.ঝুঁকি নেয়ার জন্য প্রস্তুত হন-“ব্যবসা কয়েকটি নিয়ম ও প্রচুর ঝুঁকির সঙ্গে একটি টাকার খেলা” -বিল গেটস। আপনি জুয়া খেলার সময় কখনোই নিশ্চিত হতে পারেন না যে, সেটি জিতবেন নাকি হারবেন। অনুরূপভাবে আপনি ব্যবসা শুরু করতে গেলেও লাভ লোকসানের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারবেন না।
বিল গেটস যখন মাইক্রোসফট শুরু করেন তখন তিনি টেনশনে থাকতেন এই নিয়ে যে, কর্মীদের মাসিক বেতন দিবেন কীভাবে! সুতরাং বুঝতেই পারছেন উনার ঝুঁকিটা কত বড়মাপের ছিল। তাই মনে রাখুন,পৃথিবীর সবকিছুই অনিশ্চিত। কিছু ত্যাগের বিনিময়েই এখানে কিছু পাওয়া যায়। তাই চলার পথে উৎসাহ এবং সাহস ধরে রাখুন। তবেই সফলতা পেতে কেউ আপনাকে আটকাতে পারবে না।
2.সাফল্যের জন্য কখনই দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন না-
“সাফল্যের একটি মূল উপাদান হল ধৈর্য্য” – বিল গেটস। ধৈর্য্য এমন একটি জিনিস যা অসম্ভবকেও সম্ভব করতে পারে। ধরে নিন কোনো কিছুই সহজে পাবেন না। তাই ধৈর্য্য ধরুন। ধৈর্য্য সহকারে চেষ্টা ও সংগ্রাম করে যান। পল এলেন ও বিলগেটস মাইক্রোসফটের যাত্রা শুরু করেছিলেন একটি নড়বড়ে প্রতিষ্ঠান হিসেবে ।
কিন্তু তাদের চেষ্টা ও পরিশ্রমের দরুন বর্তমানে মাইক্রোসফটের বাজারমূল্য ৫০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি। একটি প্রবাদ আছে যে, There are no shortcuts to success. তাই পরিকল্পনা না করে তড়িৎগতিতে কোনো সিদ্ধান্ত নিবেন না। সুনির্দিষ্ট প্ল্যান নিয়ে ব্যবসায় নেমে পড়ুন আর তাড়াহুড়ো না করে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিন।3. আপনি যা তার জন্যই গর্বিত হোন -
“পৃথিবীর কারো সঙ্গেই নিজেকে তুলনা করবেন না, যদি তা করেন তাহলে আপনি নিজেই নিজেকে অপমান করছেন” – বিল গেটস। আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা অন্যদের মত সফল, সম্পদশালী এবং বুদ্ধিমান না। জেনে রাখুন, ইচ্ছা করলেই আপনি বিল গেটস হতে পারবেন না। তাই অন্যের সঙ্গে নিজের তুলনা করা বন্ধ করুন। মনে রাখুন সবাই একই বৈশিষ্ট্যের নয়। তাই অন্যের সঙ্গে নিজের তুলনা নয়।
নিজের মধ্যে থাকা ইউনিক বৈশিষ্ট্যটি খুঁজে বের করুন। আর তার উপর আস্থা রাখুন সফল আপনি হবেনই। নিজের যত সক্ষমতা আছে তার সবকিছু ব্যবসাতে ঢেলে দিন। ব্যবসাতে প্রতিনিয়ত কলা-কৌশলে পরিবর্তন আনুন। ব্যবসা করতে গেলে আত্মবিশ্বাস সবচেয়ে বড় শক্তি, বিল গেটস এই আত্মবিশ্বাসের দ্বারাই হার্ভার্ড ছেড়ে দিয়ে মাইক্রোসফট গড়তে পেরেছিলেন।
4.সবসময় নম্র থাকুন -“সাফল্য একজন উস্কানি দেয়া শিক্ষকের মত, যা বুদ্ধিমান লোকদের মাথায় এটি ঢুকায় যে, তারা কখনো ব্যর্থ হবে না” – বিল গেটস। অনেকেই সফলতা পেয়ে নিজেকে আকাশচুম্বী মনে করা শুরু করে দেয়। যদি আপনিও তা মনে করেন তাহলে আমি বলব আপনি সফলতার তাৎপর্যই বুঝেন না।
আপনি বিশ্বাস করুন আর না করুন, জীবন হল একটি চাকার মত অর্থাৎ আনপ্রেডিকটেবল। আজ আপনার অবস্থান অনেক উপরে, কাল তলানিতে থাকা অসম্ভব কিছু না। আপনি সফলতার যত উপরেই উঠুন না কেন কখনোই ভুলবেন না আপনি কোথায় ছিলেন। আপনার কর্মীদের সঙ্গে সবসময় ভালো আচরণ করুন। এতে তারা আপনার কোম্পানিকে সর্বোচ্চ বেনিফিট দিতে উৎসাহিত হবে। আপনার কোম্পানিকে তারা নিজের মনে করবে।
5. সবকিছু ইতিবাচকভাবে নিন এবং শিখতে ভালোবাসুন -
“ আপনার সবচেয়ে অসন্তুষ্ট কাস্টমাররাই আপনার শেখার সর্বোত্তম উৎস” – বিল গেটস। ব্যবসার শুরুতে আমরা যদি সমলোচনা বা খারাপ প্রতিক্রিয়া পাই তাহলে আমরা উৎসাহ হারিয়ে ফেলি। কিন্তু আপনি যদি অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন যে কাস্টমারদের সমলোচনাই আপনার শেখার সর্বোত্তম স্থান।
বিজনেস স্ট্রেটেজিতে আপনার ভুল কিংবা অসম্পূর্ণতাগুলো সবচেয়ে ভালোভাবে চিহ্নিত করা যায় কাস্টমারদের কাছ থেকে পাওয়া ফিডফ্যাক হতে। কাস্টমারদের কাছ হতে আসা সমালোচনা এবং খারাপ প্রতিক্রিয়াগুলো ইতিবাচকভাবে নিন। আর এগুলোকে আপনার প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের প্রভাবক হিসেবে ব্যবহার করুন।6.ব্যর্থতাকে মেনে নিন এবং এগিয়ে যান -
“সাফল্যকে উদযাপন করা ভালো, তবে তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ব্যর্থতা থেকে পাওয়া শিক্ষাকে মনে রাখা”- বিল গেটস। আপনি যখন সফল হবেন তখন সবাই আপনাকে সম্মান করবে, গুরুত্ব দিবে, সাহায্য করতে চাইবে। আপনার জীবন আনন্দে ভরপুর থাকবে। কিন্তু যখন ব্যর্থতায় পতিত হবেন তখন দেখবেন কেউ আপনাকে চিনবেই না, চারিদিকে অন্ধকার দেখবেন। তখন আপনি বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষী কিংবা ব্যবসার কৌশল প্রভৃতির আসল রূপটা বুঝতে পারবেন। ব্যর্থতা আপনাকে যে শিক্ষা দিবে তা আর কোথাও হতে পাবেন না।
আপনি জীবনে সফলতার যত উপরের অবস্থানেই যান না কেন ব্যর্থতা থেকে পাওয়া শিক্ষাগুলো ভুলবেন না, এই শিক্ষাগুলোই আপনার সফলতার প্রতিটা ধাপ গড়ে তুলতে সহয়তা করবে। আর জীবনে ভুল বা ব্যর্থতা আসবেই, বিল গেটসও প্রথমবার ব্যবসাতে সফলতার মুখ দেখেননি।
7.যত দ্রুত সম্ভব নিজেই নিজের বস হোন-“যদি তুমি নিজের স্বপ্ন গড়তে না পার, তাহলে অন্য কেউ তার স্বপ্ন গড়তে তোমাকে ভাড়া করবে” – বিল গেটস। বিল গেটস অল্প বয়সেই তার কোম্পানির বস হয়েছিলেন, যা তাকে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে। আপনি যেই ব্যবসাই শুরু করতে চান না কেন, দেরি না করে আজই নেমে পড়ুন। যত দেরি করবেন আপনার মনোবল ততই কমে যাবে।
সর্বশেষ কথা হল, উদ্যোক্তাদের পথ সবসময়ই বাধা-প্রতিবন্ধকতায় পরিপূর্ণ হয় বিল গেটসও এর ব্যতিক্রম ছিলেন না। ব্যবসার শুরুর আগে ব্যবসার বিষয়টি নিয়ে প্রচুর স্টাডি করুন। কী করলে আপনার ব্যবসার প্রসার বাড়বে, লক্ষ্যমাত্রার মুনাফা অর্জিত হবে তা খেয়াল করে ব্যবসায়ের সিদ্ধান্তগুলো একে একে নিন।
বিগত বছরের ভুলগুলোর কারণ খুঁজে বের করুন এবং সেগুলো যাতে আর না হয় সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিন। আর হ্যাঁ পরিশ্রম, মূলত এর উপরই আপনার ব্যবসার বর্তমান-ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে। বিল গেটস বছরের মাত্র দুইদিন পূর্ণ বিশ্রাম নিতেন তাও আবার সারাদিন বই পড়ে কাটাতেন।
আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপণের উপর ক্লিক করে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী জিনিস কিনুন তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।
0 Post a Comment:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন